প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য যেমন বিমোহিত করে, রুদ্ররোষ করে তেমনি উতলা ও বিক্ষুব্ধ হলেও প্রকৃতি তার নিজের নিয়মে বয়ে যেতে পছন্দ করে। এপ্রিল-মে এই সময়টায় গ্রীষ্মের খরতাপে চারপাশ পুড়তে থাকলেও প্রকৃতি যে কী অপূর্ব মহিমায় ভরে ওঠে! বসন্তে ওই অর্থে বৃক্ষরা পত্রবতী হয়ে ওঠে না; যে অর্থে গ্রীষ্মে গাছপালা পরিপূর্ণতা পায়। একটিও বৃক্ষের শাখা পাওয়া যাবে না, যাতে কচি সবুজ পাতায় ভরে না ওঠে। এই কচি সবুজ পাতাগুলো এপ্রিল-মে মাসে এসে গায়ে গতরে বিশেষ দ্যোতনা ধারণ করে ধারণ করে গাঢ় সবুজে, পাহাড়ের চূড়ায় মিজোরাম ভিউ রিসোর্টের মাচার উপর বসে দেখলে মনে হয় যেন চারপাশে সবুজ গালিচায় মোড়ানো!! আপনজনকে নিয়ে এই রূপ উপভোগ করতে পারেন আমাদের আঙিনায়। যদি কালবৈশাখি শুরু হয়, এতটুকু বলতে পারি এই রূপের বর্ণনা দেয়া অসম্ভব।
প্যাকেজ প্রাইজ: ৩৭০০/- (দুই জনের জন্য)
প্যাকেজে যা যা সংযুক্ত ১. এক রাতের জন্য কাপল রুম (অদ্রি/ আভা/আইচুক/নিম্বাস)
আঁকা বাঁকা পাহাড়ে চলার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে মূলত আমরা পাহাড়ে ছুটে যাই।
মুগ্ধ হয়ে হা হয়ে থাকি আমরা পুরো রাস্তা জুড়ে। কখনো নামে, আবার কখনো গাড়ি উঠে পড়ে কোন পাহাড়ের চূড়ায়। এই ভ্রমনে ক্লান্তি তেমন ভর করেনা, ক্লান্তি এসে ঠিক তখনি ভর করে যখন পথের শেষ হয়।
সাধারণত পাহাড়ের চূড়ায় এসে পথের শেষ হয়। প্রয়োজনে কটেজ বা রিসোর্ট গুলো এখানে তৈরি করা হয়। আমরা যেন পাহাড়ের চূড়ায় বসে প্রকৃতি উপভোগ করতে পারি।
রাঙামাটি জেলার সাজেকের কটেজ বা রিসোর্ট গুলো গড়ে উঠেছে পাহাড়ের চূড়ার রুইলুই পাড়ায়। রুইলুই পাড়ার মূল দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে যাওয়া সড়ককে কেন্দ্র করে রাস্তার দুপাশে গড়ে উঠেছে রিসোর্ট গুলো। রুইলুই পাড়ার তিনপাশ থেকে দেখা যায় বাংলাদেশের অংশ, আর পূর্ব পাশের বিশাল বিশাল পাহাড়ের ভারতের মিজোরামের অংশ। দুইদেশকে আলাদা করে বয়ে চলছে সাজেক নদী। স্বাভাবিক ভাবে সৃষ্ট মেঘের ছুটে চলা কিংবা পাহাড়ের পাদদেশে জমা হওয়াটা বেশির ভাগই হয় রুইলুই পাড়ার পূর্ব দিকে সাজেক নদীকে কেন্দ্র করে।
রুইলুই পাড়ার রিসোর্ট গুলো মূলত তৈরি করা হয়েছে বসে বসে পাহাড়ের সৌন্দর্য ও মেঘের বিভিন্ন রূপ উপভোগ করতে। গড়ে উঠা রিসোর্ট গুলো পূর্ব ও পশ্চিম পাশে হওয়াতে সবারণত ভ্রমণপিয়াসীদের আগ্রহ থাকে মূলত পূর্ব পাশের অর্থাৎ মিজোরাম ভিউ রিসোর্টের দিকে।
মিজোরাম ভিউ অর্থাৎ পূর্ব দিকের রিসোর্ট গুলো থেকে মিজোরামের বড় বড় পাহাড়ের আড়াল থেকে মেঘ ভেদ করে উঠা সূর্য মামা, আপনাকে মুগ্ধ করবেই। মূলত বেশিরভাগ ট্যুরিস্ট এই ভোরের, মেঘের ছবি দেখে সাজেকে আসতে আগ্রহী হয়ে উঠেন কিংবা সাজেক ঘুরতে আসেন।
বাংলাদেশের অংশ থেকে মিজোরামের পাহাড় গুলো অনেক বড় বড়। মিজোরাম পাহাড়ের পাদদেশে থেকে সাজেকের রুইলুই পাড়া পযর্ন্ত ভোরের সময় মেঘে ঢাকা থাকে।
স্বাভাবিক ভাবে পশ্চিম পাশে বা বাংলাদেশ ভিউ রিসোর্ট থেকে এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে আপনাকে ভোরে উঠে হেলিপ্যাড কিংবা উঁচু কোন খোলা স্থানে যেতে হবে, যা আপনি যাচাই করে নিলে পূর্ব পাশ বা মিজোরাম ভিউ রুমে বসে কিংবা বারান্দায় বসে উপভোগ করতে পারবেন।
সকালে মেঘের আনাগোনা, রুমে মেঘের ছোঁয়া কিংবা মেঘের আড়াল থেকে লাল টকটকে সূর্য উঠার দৃশ্য দেখতে হলো আপনাকে পূর্ব পাশের অর্থাৎ মিজোরাম ভিউ রিসোর্টে রাত কাটাতে হবে। মিজোরাম ভিউ হলেও অনেক রিসোর্টের রুম থেকে কিন্তু এই দৃশ্য দেখা যায় না। হাতেগোনা কিছু রিসোর্ট আছে, যাদের প্রতিটি রুম থেকে এই ভিউ দেখা যায়।
তাই বুকিং দেয়ার সময় বিস্তারিত জেনে, বুঝে আপনার রুম বুকিং দিলে আপনার সাজেক ভ্রমণ ষোলআনা পরিপূর্ণ হবে।
জেনে রাখা ভাল
সাজেকের সৌন্দর্য সবচেয়ে ভাল পূর্ব কিংবা মিজোরাম ভিউ পাশ থেকে।
সকালে মেঘ জমে পূর্ব বা মিজোরাম ভিউয়ের দিকে।
স্বাভাবিক ভাবে মেঘের আড়াল থেকে সূর্য উঠে পূর্ব কিংবা মিজোরাম ভিউয়ের দিকে।
পূর্ব কিংবা মিজোরাম ভিউ রিসোর্ট হলেও, অনেক রিসোর্ট থেকে মেঘ বা সূর্য উদয় দেথা যায়না।
পূর্ব কিংবা মিজোরাম ভিউ রিসোর্ট হলেও, রিসোর্টে প্রতিটি রুম থেকে ভিউ ভাল পাওয়া যায়না।
পূর্ব কিংবা মিজোরাম ভিউ রিসোর্ট হলেও, অনেক কম রুম থেকে মিজোরাম ভিউ ভাল পাওয়া যায়।
স্বাভাবিকভাবে পূর্ব কিংবা মিজোরাম ভিউ রিসোর্টের যে রুম গুলো মিজোরাম ভিউ ভাল, তাদের ভাড়া একটু বেশি।
রুম বুকিং দেয়ার সময় রুম নাম্বার কিংবা নাম অনুসারে ছবি কিংবা ভিডিও দেথে রুম বুকিং করা উচিত।
পূর্ব কিংবা মিজোরাম ভিউ রিসোর্ট হলেও, প্রতিটি রুমের ভিউ সমান নাও হতে পারে।
রুম যদি সঠিক ভাবে নির্ধারণ করতে পারেন, হয়তো ঘুম ভেঙে দেখবেন আপনি মেঘের আড়ালে ডুব দিয়েছেন।